নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঢেউয়ের আঘাতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ইউনিয়নের একমাত্র ইটের রাস্তাটির চার কিলোমিটার ভেঙে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে চরবাসীর দুর্ভোগ বেড়েছে।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেশকিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
এতে তীব্র জোয়ারের ধাক্কায় উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের একমাত্র ইটের রাস্তাটি ভেঙে যায়। ফলে এক প্রান্তের সঙ্গে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ, রোগী ও জরুরি সেবার ওপর প্রভাব পড়েছে।
২৯ মে নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের স্রোতে ঢালচর ইউনিয়নের মাঝের চর খাল এলাকার কাঠের ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে চর তারুয়া সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত রাস্তার প্রায় দুই কিলোমিটার ইটের রাস্তার বিভিন্ন অংশে ভেঙে গেছে।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের দিকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি এইচবিবিকরণ বা ইটের রাস্তা করা হয়।
ঢালচরের স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেন মাঝি বলেন, কয়েক বছর ধরে ঢালচর নদীভাঙন চলছেই, কাউকে উদ্যোগ নিতে দেখছি না। এছাড়া জোয়ার ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত সমস্যা বেড়েই চলেছে এই চরে। কয়েক বারের জোয়ারের ধাক্কায় আমাদের ঢালচরের একমাত্র ইটের রাস্তাটির ভেঙে গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন স্থানটিতে খালে পরিণত হবে। তাই এই রাস্তাটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ঢালচর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক জাসিম পাটোয়ারী বলেন, ২০১৩ সালে নির্মাণ করা ঢালচরের একমাত্র ইটের রাস্তাটি। বেড়িবাঁধ না থাকায় বারবার জলোচ্ছ্বাসের কারণে রাস্তাটি ভেঙে যায়। কোনো সরকারের আমলে এই চরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। চরে প্রয়োজন একটি আশ্রয়কেন্দ্র, একটি কিল্লা, একটি হাসপাতাল। কিছুই নেই, মানুষের দুর্ভোগেরও শেষ নেই। বিশেষ করে এই চরের চতুর্পাশে বেড়িবাঁধ করে দিলে মানুষের আর দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। রাস্তাটি আর ভাঙতো না।
ঢালচর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি জাহাঙ্গীর মাতব্বর বলেন, নিম্নচাপের কারণে এখনো পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। আমি উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছে।
উপজেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিএম ওয়ালিউল ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানির স্রোতে ঢালচরের একমাত্র ইটের রাস্তাটির অনেকস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা রাস্তাটি মেরামত করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে খুব দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করা হবে।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশনা শারমিন মিথি জানান, জোয়ারের স্রোতে ঢালচরের মাঝের চর কাঠের সেতুর দুপাশের মাটি সরে যায়। চরবাসীর চলাচলের একমাত্র ইটের রাস্তাটি ভেঙে গেছে। রাস্তাটি মেরামত করার জন্য দুই প্রকল্পের কাছে আবেদন জানিয়েছি। আশা করি, শিগগিরই রাস্তাটি মেরামত করা হবে।
ঊষার আলো-এসএ