মঙ্গলবার থেকে ক্লাশ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী। টানা পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে নবাগত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক কোর্সের সকল বিভাগের ভিপি ও সিআরদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শিক্ষার্থীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের কুয়েট একটি স্বনামধন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও গৌরবের পেছনে রয়েছে শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম, শিক্ষকদের অবদান এবং প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকা। আমি শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ ও হতাশা উপলব্ধি করছি। আপনাদের শিক্ষা জীবনের একটি মুহূর্তও যেন নষ্ট না হয়, সেটি আমাদেরও আন্তরিক চাওয়া। প্রশাসন সর্বদা চায় একটি শান্তিপূর্ণ ও সচল একাডেমিক পরিবেশ বজায় রাখতে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, যেকোনো সমস্যা সমাধানে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছি, যাতে খুব দ্রুত ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা যায়। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা ধৈর্য ধরুন, আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব। আমরা চাই কুয়েট হোক প্রযুক্তি, জ্ঞান ও মানবিক মূল্যবোধে উজ্জ্বল এক প্রতিষ্ঠান। এজন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে’।
একাডেমির কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সাহিদুল ইসলাম বলেন, একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর বিষয় নিয়ে আজ ভিসি স্যার আমাদের সঙ্গে মিটিং করবেন, ওই মিটিংয়ে ভিসি স্যার কি বলেন, সেটার উপর ডিপেন্ড করে আমরা সমিতির মিটিং করে সিদ্ধান্তের কথা আপনাদের জানাবো’।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে উপাচার্য মঙ্গলবার থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর বিষয় নিয়ে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বিনিময় সভা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার।
১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচারের দাবিতে শিক্ষক সমিতি ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয়। সেই থেকে শিক্ষকেরা আর ক্লাসে ফেরেননি।
আর শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে ২২ মে অধ্যাপক হজরত আলী পদত্যাগ করেন। পরে ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকার। পরে গত বৃহস্পতিবার বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।
ঊষার আলো-এসএ